বাধা ও আইনি জটিলতা সম্ভাবনার কুমির চাষে

বাধা ও আইনি জটিলতা থাকলে ও  প্রত্যন্ত  ভালুকার গ্রামে কেন্দ্র থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার ভিতরে বিস্তীর্ণ জায়গাজুড়ে গড়ে উঠেছে একটি রেপটাইলস ফার্ম। স্যাঁতলাটি ইটের প্রাচীরে দিয়ে তৈরি । বাংলাদেশে কুমির চাষে আশার আলো দেখিয়েছে ভালুকার রেপটাইলস ফার্ম। তারা বাণিজ্যিকভাবে চাষ ও রপ্তানি করে আয়ের পথও তৈরি করছে।

পনের একর জায়গায় 2004 সালে 74 টি কুমির নিয়ে যাত্রা শুরু করে বর্তমানে কুমির খামারে ২৫শ কুমির। প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ১৬শ রপ্তানিও করেছে । 2009 সালে আকিজ ওয়াইল্ড লাইফ লিমিটেড রপ্তানিতে ব্যাপক চাহিদা ও লাভজনক করেছে।  ৫০টি নিয়ে যাত্রা শুরু করে বতর্মানে তাদের খামারে আছে দুই হাজার কুমির।

 রেপটাইলস ফার্ম কুমির ব্যবসা ও চাষের সেই পথিকৃত এখন নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত।  ফার্মের কুমিরগুলো জন্য পর্যাপ্ত খাবার না পাবার সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। খামারে ৪শ/৫শ রপ্তানি উপযোগী কুমির রয়েছে ।

ভালুকার রেপটাইল ফার্মে  ইট দিয়ে ঘেরা চৌবাচ্চার মধ্যে কিছু পানি, উঁচু মাটির ঢিবি, আবার লম্বা ঘাসও রয়েছে । কুমিরের বয়স ও সাইজ অনুযায়ী রাখা হয়েছে আলাদা আলাদা চৌবাচ্চায়।শব্দ না পেলে খুব বেশি নড়ে না এরা। বুক আঁকড়ে মাটি কামড়ে পড়ে থাকে। 

ভালুকার রেপটাইল ফার্মে  প্রখর রোদে কিছু কুমিরকে দেখা গেলো পানিতে শরীর ডুবিয়ে বসে থাকতে। কিছু কুমির বেশ বড় সাইজের। পাশে থাকা কয়েকজন কর্মী সাবধান করছিলেন। কখন না আবার লাফিয়ে উঠে আক্রমণ করে! খামারের নিরিবিলি পরিবেশের সুযোগে আশপাশের গাছে বাসা বেঁধে অসংখ্য বক। তাদের কিচিরমিচির আওয়াজ লেগেই থাকে সারাদিন।

কুমির খামারের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু সাইম আরিফুল ইসলাম বলেন  ২০০৪ সালে এই ফার্ম যাত্রা শুরু করে । বর্তমানে দুই হাজার পাঁচশ কুমির আছে । ডিম থেকে ফোটার পর কুমির ছয় মাসে পরিপক্ব হয়। সাধারণত ডিম দেয় বর্ষাকালে। প্রজনন থেকে রপ্তানি পর্যন্ত সব প্রক্রিয়া খামারেই হয়।

, ২০১০ সালে জাপানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৬৭টি হিমায়িত কুমির রপ্তানির মধ্য দিয়ে বাণিজ্যিক রপ্তানি শুরু করে রেপটাইলস। এ পর্যন্ত পাঁচবারে জাপানে রপ্তানি করা হয়েছে ১৫০৭টি চামড়া।

ডা. আরিফ আমাদেরকে জানান, জাপান, ইতালি, ফ্রান্স ও সিঙ্গাপুরে চামড়ার চাহিদা ব্যাপক। কুমিরের চামড়া দিয়ে ভ্যানিটি ব্যাগ, ওয়ালেট, বেল্টসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরি করা হয়। একেকটি চামড়ার রপ্তানিমূল্য চার থেকে পাঁচশ ডলার।

তিনি আরো জানান, ‘ডিম থেকে ফুটে রপ্তানিযোগ্য হওয়া পর্যন্ত এদের পেছনে খরচ আড়াইশ ডলার। । বেশি রপ্তানি করা গেলে লাভের পরিমাণও বাড়বে।’

কুমিরের মাংসেরও রপ্তানি চাহিদা আছে বলে জানান আরিফ। তিনি আরো জানান, আমরা এখন মাংস ডাম্প (মাটিচাপা দিয়ে নষ্ট) করি। মাংস বেশি পরিমাণ হলে রপ্তানি করার সুযোগ আছে, চাহিদাও আছে। কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও চীনে মাংসের চাহিদা বেশি। এসব দেশের মানুষ কুমিরের মাংস খায়।

আমরা জানতে পারি , এখন খামারে চার-পাঁচশ রপ্তানি উপযোগী কুমির আছে। কোম্পানির ঋণ সংক্রান্ত আইনি জটিলতায় রপ্তানি বন্ধ। এখন শুধু খরচই হচ্ছে, আয় নেই। এতে একসময় ডিম দেওয়া, প্রজনন ক্ষমতা ও শক্তি হারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়বে সব কুমির।

২০২০ সালের অক্টোবর মাসে কোম্পানির অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (জব্দ) করার পর থেকে খাবারের স্বাভাবিক সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। https://bit.ly/3EMBqLr


Post a Comment

0 Comments