গম নিয়ে বিশ্ববাজারে উদ্বেগ ঘনীভূত হচ্ছে

 গম নিয়ে বিশ্ববাজারে উদ্বেগ ঘনীভূত হচ্ছে

চলতি বছরের অক্টোবরে মধ্যপ্রাচ্যের একটি ময়দা কারখানা  কোটি ৩০ লাখ ডলারের বেশি দামে অস্ট্রেলিয়া থেকে এক কার্গো উচ্চজাতের গম ক্রয় করে বর্তমানে এর চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি দাম দিয়ে আরো এক কার্গো গম কিনতে ইচ্ছুক প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু অঞ্চলটির রফতানিকারকরা বেশি দাম দিয়েও পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারছেন না।

বিশ্বের বৃহৎ উৎপাদক দেশগুলোর গম উৎপাদন  রফতানির সম্ভাবনা কমে গেছে ফলে প্রতিষ্ঠানটিসহ কয়েক ডজন বৈশ্বিক আমদানিকারক উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ গম সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছেন  এসব গম রুটিনুডলসসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্য তৈরিতে ব্যবহার হয়।

সর্বশেষ উৎপাদন ঘাটতি দেখা দেয় অন্যতম শীর্ষ দেশ অস্ট্রেলিয়ায় চলতি মৌসুমে দেশটি রেকর্ড  কোটি ৪৪ লাখ টন গম উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখেছিল। কিন্তু অপর্যাপ্ত  বিলম্বিত বৃষ্টিপাতের কারণে সে আশায় গুড়ে বালি  শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে কমছে প্রোটিন লেভেলও।

মধ্যপ্রাচ্য  উত্তর আফ্রিকায় খাদ্যশস্য সরবরাহকারী এক ব্যবসায়ী জানানশীর্ষ রফতানিকারক রাশিয়াঅস্ট্রেলিয়া  যুক্তরাষ্ট্রের ওপর বিশ্ববাজার অনেকাংশেই নির্ভরশীল। কিন্তু এসব দেশের নেতিবাচক উৎপাদন পরিস্থিতির কারণে কয়েক সপ্তাহজুড়ে আন্তর্জাতিক বাজারে নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে। আপনি উচ্চ মানসম্পন্ন গমের ক্রয়াদেশ দিয়ে থাকলেও বাস্তবে কী পাচ্ছেনতা নিয়ে কিন্তু অনিশ্চয়তা থেকেই যায়।

  ধারাবাহিকতায় গত মাসে শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ গমের দাম নয় বছরের সর্বোচ্চে উন্নীত হয়।  সময় বিশ্বের শীর্ষ গম রফতানিকারক রাশিয়া  চতুর্থ রফতানিকারক অস্ট্রেলিয়ায় পণ্যটির দাম সর্বকালের সর্বোচ্চে উঠে আসে।

জাতিসংঘের খাদ্য  কৃষি সংস্থা (এফএওজানায়অক্টোবরে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক দাম এক দশকের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। বাজারের এমন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পেছনে দায়ী করা হচ্ছে গম এবং অন্যান্য খাদ্যশস্য  ভোজ্যতেলকে।

এর মধ্যে যেসব দেশ এখনো করোনায় সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনিতাদের জন্য গমের এমন ঊর্ধ্বমুখিতা ভীতিকর রূপ ধারণ করেছে। পাশাপাশি পণ্য জাহাজীকরণ ব্যয় ১০ বছরের সর্বোচ্চে উঠে আসায় পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করেছে।

এদিকে বিশ্বের শীর্ষ গম মিলাররা চলতি বছরের শুরুর দিকে অতিরিক্ত দামের কারণে গমের মজুদ বাড়াতে কার্পণ্য করেন। তাদের প্রত্যাশা ছিলঅস্ট্রেলিয়ায় কৃষিপণ্যটির উৎপাদন বৃদ্ধির যে পূর্বাভাস মিলেছেতা ফলে গেলে দাম পড়তে পারে। কিন্তু  পূর্বাভাস উল্টো দুঃস্বপ্নে রূপ নিয়েছে।


 
বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ মিলারদের কাছে গমের মজুদ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কমে গেছে। অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে শীর্ষ রফতানিকারক রাশিয়াঅস্ট্রেলিয়া  কানাডা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম উচ্চমানের গম সরবরাহ করছে। চলতি বিপণন মৌসুমে রাশিয়ার গম উৎপাদন কমতে পারে। রফতানি ৩৪ শতাংশ কমার আশঙ্কা রয়েছে।

Post a Comment

0 Comments